ঢাকা ০৬:২০ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনামঃ
প্রতিনিধি নিয়োগঃ
এটি একটি প্রিন্টভার্ষণ পত্রিকার ওয়েবসাইট। সারাদেশে জেলা উপজেলায় প্রতিনিধি নিয়োগ করা হবে। আগ্রহীদের শুধুমাত্র ইমেইলের মাধ্যমে যোগাযোগ করার জন্য বলা হইলো। -বার্তা সম্পাদক।

স্কুল শিক্ষিকার ছেলে মেয়ে দুই স্কুলে ভর্তি!

উপবৃত্তির টাকা নিতে বোয়ালমারীতে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকার ছেলে মেয়েকে দুটি স্কুলে ভর্তি করানোর অভিযোগ পাওয়া গেছে । নিয়ম রয়েছে একজন শিক্ষার্থী দু’টি স্কুলে ভর্তি হতে পারবেনা। সে নিয়মকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা তার দুই সন্তানকে দুটি প্রতিষ্ঠানে ভর্তি করেছে।

 

স্কুল শিক্ষিকা সিমা রানী কর্মকার সাতৈর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। তাঁর নিজের কর্মরত প্রতিষ্ঠান সাতৈর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নিজের ছেলে মেয়েকে ভর্তি করেন। ছেলে ৪র্থ শ্রেণীতে অধ্যয়নরত রয়েছে যার রোল নং ১ ও মেয়ে ৫ম শ্রেণীতে অধ্যয়নরত রয়েছে যার রোল নং ৩। একই সাথে বোয়ালমারী নিউ মডেল প্রিক্যাডেট এন্ড হাইস্কুলে ছেলেকে ৪র্থ শ্রেণীতে ভর্তি করেন। যার রোল নং ১৯ ও মেয়ে ৫ম শ্রেণীতে ভর্তি করেন। যার রোল নং ৩৮।

 

তাঁর ছেলে মেয়ে দু প্রতিষ্ঠানে দু এক দিন পরপর ক্লাস করেন। এনিয়ে চারদিক থেকে নানা আলোচনা সমালোচনা ভেসে আসছে। একজন সরকারি স্কুলের শিক্ষিকা কেমনে তার ছেলে মেয়েকে একই সাথে দু’টি বিদ্যালয়ে ভর্তি করতে পারলেন।

 

ওই স্কুল শিক্ষিকার বিরুদ্ধেও নানা ধরণের অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে । স্কুল শিক্ষিকা সিমা রানী শিক্ষার নতুন কারিকুলাম নিয়ে নিজের ফেসবুক আইডিতে নানা কুৎসা রটনা করাতে উপজেলা শিক্ষা অফিস শোকজ করেছিলেন। পরে তিনি ক্ষমা চেয়ে সে যাত্রায় রেহায় পান।

 

তাঁর স্বামীর সাথেও কোন প্রকার বনি বনা হয়না। স্বামীকে নিজ বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দিয়ে ছেলে মেয়ে নিয়ে স্বামীর বাড়ীতেই বসবাস করেন ওই স্কুল শিক্ষিকা। যার কারণে স্বামী নিজ বাড়ীতে জায়গা না পেয়ে বিভিন্ন স্থানে রাত যাপন করেন। এমন তথ্য উঠে এসেছে তাঁর স্বামীর একান্ত সাক্ষাত কারে। তাঁর স্বামীর দাবী একজন স্কুল শিক্ষিকা যদি এমন উগ্রবাদী হয়; তাহলে কিভাবে সে তাঁর শিক্ষার্থীদের শিক্ষা দিবে।

 

স্কুল শিক্ষিকা সিমা রানী কর্মকার তার ছেলে মেয়ে দু’টি বিদ্যালয়ে ভর্তির বিষয় স্বীকার করে বলেন তাতে সমস্যা কি? এভাবে অন্য শিক্ষিকার ছেলে মেয়েও দুই স্কুলে লেখাপড়া করে। আমার নিজের স্কুলে ওরা প্রথম শ্রেণী থেকে পড়ে আসছে। এখন ওদের নিরাপত্তার জন্য বাসার কাছে নিউ মডেল প্রিক্যাডেট এন্ড হাইস্কুলে ভর্তি করেছি। তবে আমার স্বামীর মন্তব্য সঠিক নয়, বরং সেই আমাকে এবং আমার সন্তানদের নানাভাবে হয়রানী করে আসছে।

 

সাতৈর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রাশিদা আখতার বলেন, বিষয়টা আমার জানা ছিলনা। আপনার মাধ্যমে জানতে পেরেছি। এজন্য তাঁর ছেলে মেয়ে মাঝে মাঝে স্কুলে আসেনা। তবে সে বলে অসুস্থতার কারণে তারা স্কুলে আসতে পারেনা। তাঁর ছেলে মেয়ে ক্লাস ওয়ান থেকে আমাদের স্কুলের ছাত্র-ছাত্রী। সে হিসেবে তারাও উপবৃত্তি সম্মানী ভাতা পেয়ে থাকেন। তবে প্রতিমাসে তিনদিন অনুপস্থিত থাকলে ওই মাসের সম্মানী ভাতা পাবেনা। তারা যদি অন্য স্কুলে ভর্তি হয়ে থাকে; তাহলে বিষয়টি  খতিয়ে দেখে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে অবহিত করা হবে।

 

নিউ মডেল প্রিক্যাডেট এন্ড হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক পরেশ কুমার চক্রবর্তী বলেন, একজন শিক্ষার্থী দুই স্কুলে ভর্তি হতে পারবেনা। তবে এমনটি কেউ করে থাকলে তাঁর ভর্তি বাতিল করা হবে।

 

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আবু আহাদ মিয়া বলেন, এমন অভিযোগ আগে আমরা পাইনি। বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখছি। তবে যদি কোন শিক্ষার্থী দু’টি প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হয়ে থাকে; তাহলে একটি বিদ্যালয়ের ভর্তি বাতিল করা হবে।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

মেডিকেলে চান্স পাওয়া সেই ছাত্র এবার পেল সুবাস সাহার আর্থিক সহায়তা

স্কুল শিক্ষিকার ছেলে মেয়ে দুই স্কুলে ভর্তি!

আপডেট সময় ০২:০২:৫৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৪ মার্চ ২০২৪

উপবৃত্তির টাকা নিতে বোয়ালমারীতে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকার ছেলে মেয়েকে দুটি স্কুলে ভর্তি করানোর অভিযোগ পাওয়া গেছে । নিয়ম রয়েছে একজন শিক্ষার্থী দু’টি স্কুলে ভর্তি হতে পারবেনা। সে নিয়মকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা তার দুই সন্তানকে দুটি প্রতিষ্ঠানে ভর্তি করেছে।

 

স্কুল শিক্ষিকা সিমা রানী কর্মকার সাতৈর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। তাঁর নিজের কর্মরত প্রতিষ্ঠান সাতৈর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নিজের ছেলে মেয়েকে ভর্তি করেন। ছেলে ৪র্থ শ্রেণীতে অধ্যয়নরত রয়েছে যার রোল নং ১ ও মেয়ে ৫ম শ্রেণীতে অধ্যয়নরত রয়েছে যার রোল নং ৩। একই সাথে বোয়ালমারী নিউ মডেল প্রিক্যাডেট এন্ড হাইস্কুলে ছেলেকে ৪র্থ শ্রেণীতে ভর্তি করেন। যার রোল নং ১৯ ও মেয়ে ৫ম শ্রেণীতে ভর্তি করেন। যার রোল নং ৩৮।

 

তাঁর ছেলে মেয়ে দু প্রতিষ্ঠানে দু এক দিন পরপর ক্লাস করেন। এনিয়ে চারদিক থেকে নানা আলোচনা সমালোচনা ভেসে আসছে। একজন সরকারি স্কুলের শিক্ষিকা কেমনে তার ছেলে মেয়েকে একই সাথে দু’টি বিদ্যালয়ে ভর্তি করতে পারলেন।

 

ওই স্কুল শিক্ষিকার বিরুদ্ধেও নানা ধরণের অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে । স্কুল শিক্ষিকা সিমা রানী শিক্ষার নতুন কারিকুলাম নিয়ে নিজের ফেসবুক আইডিতে নানা কুৎসা রটনা করাতে উপজেলা শিক্ষা অফিস শোকজ করেছিলেন। পরে তিনি ক্ষমা চেয়ে সে যাত্রায় রেহায় পান।

 

তাঁর স্বামীর সাথেও কোন প্রকার বনি বনা হয়না। স্বামীকে নিজ বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দিয়ে ছেলে মেয়ে নিয়ে স্বামীর বাড়ীতেই বসবাস করেন ওই স্কুল শিক্ষিকা। যার কারণে স্বামী নিজ বাড়ীতে জায়গা না পেয়ে বিভিন্ন স্থানে রাত যাপন করেন। এমন তথ্য উঠে এসেছে তাঁর স্বামীর একান্ত সাক্ষাত কারে। তাঁর স্বামীর দাবী একজন স্কুল শিক্ষিকা যদি এমন উগ্রবাদী হয়; তাহলে কিভাবে সে তাঁর শিক্ষার্থীদের শিক্ষা দিবে।

 

স্কুল শিক্ষিকা সিমা রানী কর্মকার তার ছেলে মেয়ে দু’টি বিদ্যালয়ে ভর্তির বিষয় স্বীকার করে বলেন তাতে সমস্যা কি? এভাবে অন্য শিক্ষিকার ছেলে মেয়েও দুই স্কুলে লেখাপড়া করে। আমার নিজের স্কুলে ওরা প্রথম শ্রেণী থেকে পড়ে আসছে। এখন ওদের নিরাপত্তার জন্য বাসার কাছে নিউ মডেল প্রিক্যাডেট এন্ড হাইস্কুলে ভর্তি করেছি। তবে আমার স্বামীর মন্তব্য সঠিক নয়, বরং সেই আমাকে এবং আমার সন্তানদের নানাভাবে হয়রানী করে আসছে।

 

সাতৈর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রাশিদা আখতার বলেন, বিষয়টা আমার জানা ছিলনা। আপনার মাধ্যমে জানতে পেরেছি। এজন্য তাঁর ছেলে মেয়ে মাঝে মাঝে স্কুলে আসেনা। তবে সে বলে অসুস্থতার কারণে তারা স্কুলে আসতে পারেনা। তাঁর ছেলে মেয়ে ক্লাস ওয়ান থেকে আমাদের স্কুলের ছাত্র-ছাত্রী। সে হিসেবে তারাও উপবৃত্তি সম্মানী ভাতা পেয়ে থাকেন। তবে প্রতিমাসে তিনদিন অনুপস্থিত থাকলে ওই মাসের সম্মানী ভাতা পাবেনা। তারা যদি অন্য স্কুলে ভর্তি হয়ে থাকে; তাহলে বিষয়টি  খতিয়ে দেখে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে অবহিত করা হবে।

 

নিউ মডেল প্রিক্যাডেট এন্ড হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক পরেশ কুমার চক্রবর্তী বলেন, একজন শিক্ষার্থী দুই স্কুলে ভর্তি হতে পারবেনা। তবে এমনটি কেউ করে থাকলে তাঁর ভর্তি বাতিল করা হবে।

 

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আবু আহাদ মিয়া বলেন, এমন অভিযোগ আগে আমরা পাইনি। বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখছি। তবে যদি কোন শিক্ষার্থী দু’টি প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হয়ে থাকে; তাহলে একটি বিদ্যালয়ের ভর্তি বাতিল করা হবে।